লালবাগ প্রাসাদ-দুর্গ মোগল আমলের স্হাপত্য মহিমায় স্বয়ং- সম্পূর্ণ । এই স্হাপত্য নিদর্শনের পাশাপাশি মোগল আমলের জীবনধারা সম্বন্ধে আরো আলোকপাত করার অভিপ্রায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কয়েক বছর আগেই লালবাগ দুর্গ জাদুঘরের পরিকল্পনা হাতে নেয় । প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের সন্নিকটে অথবা অভ্যন্তরে নতুন কোন ইমারত স্হাপন করা প্রত্নতাত্ত্বিক রীতি বিরুদ্ধ ; তাই শাহজাদা আজক কর্তৃক নির্মিত দ্বিতল দরবার হলের স্বল্প পরিসরের মধ্যেই জাদুঘর স্হাপন করা হয়েছে । কক্ষাভ্যন্তরের অন্তঃপ্রবিষ্ট প্যানেল ও কুলুঙ্গিগুলোর আসল বৈশিষ্ট্যর কোনরূপ পরিবর্তন না করে ঐগুলোকেই প্রদর্শনী অআধার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ।
ইংরেজ আমল থেকে শুরু করে স্বাধীনতা উত্তরকাল পর্যন্ত বহু মূল্যবান প্রত্নদ্রব্য দেশের বাইরে পাচার হওয়ার ফলে ও যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে মোগল আমলের জিনিসপত্র এদেশে অত্যন্ত দুষ্পাপ্য । এতদসত্বেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় কিছুসংখ্যক প্রত্নবস্তু সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে । এই সব প্রত্নবস্তুর মধ্যে রয়েছে মোগল আমলের অস্রশস্ত্র, পান্ডুলিপি, মুদ্রা, মৃৎশিল্প,কার্পেট, হস্তশিল্প ইত্যাদি ।
প্রদর্শিত দ্রব্যাদির মধ্যে মাত্র দুইটি জিনিস লালবাগ দুর্গের ইতিহাসের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে জড়িত । আর একটি হচ্ছে পরিবিবির মাজারে আল্গা অবস্হায় প্রাপ্ত কালো পাথরে উৎকীর্ণ লিপি ও আজম শাহের একটি প্রতিকৃতি । বাকী জিনিসগুলো লালবাগ দুর্গের সঙ্গে সরাসরিভাবে সম্পর্কিত না হলেও মোগল আমলের দীর্ঘ ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত । প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে, বেশীরভাগ জিনিসই মোগল আমলের শেষ যুগের ।
টিকেট প্রাপ্তিস্থানঃ
লালবাগ কেল্লার দরজার ঠিক ডান পাশেই রয়েছে টিকেট কাউন্টার, জনপ্রতি টিকেট এর দাম বিশ টাকা করে, তবে পাঁচ বছরের কম কোন বাচ্চার জন্যে টিকেট এর দরকার পড়েনা। সার্কভুক্ত বিদেশি দর্শনার্থীর জন্যে টিকেট মূল্য একশত টাকা এবং অন্যান্য বিদেশী দর্শকদের জন্য টিকেটের মূল্য দুইশত টাকা করে।
কিভাবে যাবেন
আজিমপুর বাসষ্ট্যান্ডে নেমে ১৫/২০ টাকা রিক্সা ভাড়া দিয়ে লালবাগে যাওয়া যায়। দর্শনাথী ইচ্ছা করলে পায়ে হেঁটেও লালবাগে যেতে পারেন। ঢাকার সদরঘাট লঞ্চটার্মিনাল থেকে বাবু বাজার হয়ে লালবাগে যাওয়া যায়।