পরীবিবির পরিচয় নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবুও বেশীরভাগ ঐতিহাসিকগন মনে করেন তিনি ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের ছেলে শাহজাদা আজমের স্ত্রী। ঐতিহাসিকদের মতে, মাজার নির্মাণ করা হয়েছে ১৬৮৮ সালের আগে। দরবার ঘর থেকে প্রায় নব্বই গজ পশ্চিমে পরীবিবির মাজার। এটি বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একটি পুরাকীর্কি। হিন্দু ও মুসলিম স্থাপত্যের চমৎকার মিশ্রণ রয়েছে এতে। বলা হয়ে থাকে, সম্রাট হুমায়ুনের মাজারের অনুকরণে নির্মাণ করা হয়েছিল আগ্রার তাজমহল আর তাজমহলের অনুকরণে নির্মাণ করা হয়েছে পরীবিবির মাজার। পার্থক্য শুধু আয়তনে। মূল্যবান মার্বেল পাথর, কষ্টি পাথর, বিভিন্ন রঙের ফুল ও পাতার নকশা করা টালি দিয়ে মাজারের নয়টি ঘর সাজানো হয়েছে। ছাদ কষ্টিপাথরের তৈরি। সমাধির মাঝের ঘরের ওপর একটি গম্বুজ। বড় পাতের আচ্ছাদন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গম্বুজটি। মাজারের দিকে মোট বারোটি দরজা রয়েছে।
পরীবিবির মাজারের প্রায় পঁয়তাল্লিশ গজ পশ্চিমে কেল্লার মসজিদ। মসজিদের চারকোণে চারটি মিনার এবং ছাদে তিনটি গম্বুজ রয়েছে।
ইতিহাসঃ-
সতেরো শতকে বাংলায় মোগল শাসকদের শাসন মনভাব, স্থাপত্য বিকাশের ঐতিহাসিক ক্ষেত্র এই লালবাগ কেল্লা। ইতিহাসের পাতায় লালবাগ কেল্লার রুপকার হিসেবে শায়েস্তা খানের নাম পাওয়া গেলও মুলত শায়েস্তা খান এর নিরমান কাজ শুরু করেন নি । এটি নির্মাণের স্বপ্ন এবং নির্মাণ শুরু হয়েছিল মোগল সম্রাট আওরাঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র মুহাম্মদ আজম শাহের মাধ্যমে । আজম শাহ ১৬৭৮ থেকে ১৬৭৯ সাল পর্যন্ত বাংলার সুবেদার ছিলেন ।এই সময় তিনি পিতার নামানুসারে একটি স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন । যার প্রথম নাম আওরাঙ্গবাদ কিল্লা হলেও পরবর্তীতে নাম হয় লালবাগ কেল্লা ।আজম শাহ কেল্লার কাজ শুরু করলে তিনি জরুরী তলবে ঢাকা ছেড়ে দিল্লি চলে যান। থেমে যায় কেল্লার নির্মাণ কাজ ।আজম শাহ নতুন সুবেদার শায়েস্তা খান কে অনুরোধ করেন কেল্লার কাজটি সম্পূর্ণ করতে । কিন্তু শায়েস্তা খান এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারেন নি পারিবারিক কারনে । অনেকের মতে বর্তমান এই লালবাগ কিল্লা নির্মাণের সময় শায়েস্তা খান তার কন্যা ইরান দুখত কে হারান ,ইরান দুখত ছিলেন আজম খানের স্ত্রী এবং তিনিই ছিলেন কেল্লার প্রথম রুপকার । এর পর শায়েস্তা খানএর বিশাস জাগে স্থানটি অপয়া । অতঃপর ১৬৮৪ সালে এর নির্মাণ বন্ধ করে দেন।কেল্লা নির্মাণ না করলেও তিনি তার কন্যার মাজার কে দর্শনীয় স্থাপনা বানিয়ে তুলেন । মাজারটি নির্মাণে শায়েস্তা খান ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিয়ে আসেন ।