Wellcome to National Portal
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১২ অক্টোবর ২০২২

লালবাগ দুর্গস্থ হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণ কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা ও অংশীজন সভা (১১/১০/২০২২)


প্রকাশন তারিখ : 2022-10-11

প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্কার-সংরক্ষণে মূল অবকাঠামো ও অবয়ব বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থপতি, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও সংরক্ষণ প্রকৌশলীদের আহবান জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। তিনি বলেন, সংস্কার-সংরক্ষণ কাজে যাতে মূল অবকাঠামোর কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী আজ দুপুরে রাজধানীর লালবাগ দুর্গের সেমিনার হলে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর আয়োজিত ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন লালবাগ দুর্গস্থ হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণ কার্যক্রম বিষয়ক পর্যালোচনা ও অংশীজন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রতন চন্দ্র পন্ডিত এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর।

লালবাগ দুর্গস্থ হাম্মামখানার সংস্থার-সংরক্ষণ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন প্রকল্পটির পরামর্শক বিশিষ্ট স্থপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ এম আহমেদ। বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদান করেন প্রকল্পের পরামর্শক অধ্যাপক এ কে এম শাহনাওয়াজ এবং প্রকল্পের শ্রীলঙ্কান পরামর্শক Dr. TMJ Nilan Cooray।

প্রধান অতিথি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে সাংস্কৃতিক সম্পদ ও বৈচিত্র্য রক্ষায় ম্যান্ডেট অন্তর্ভুক্ত করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশের সাংস্কৃতিক সুরক্ষায় যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছে এবং বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

বিশেষ অতিথি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর বলেন, অতীত থেকে বর্তমান সূত্রের রেশ টানা এবং ভবিষ্যতের জন্য নির্দেশনা দেয়া- এটাই প্রত্নতত্ত্বের মূল তত্ত্ব। তিনি বলেন, হাম্মামখানাসহ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংস্কার-সংরক্ষণ কাজের অভিজ্ঞতা থেকে সংশ্লিষ্ট স্থপতি, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও সংরক্ষণ প্রকৌশলীগণ লাগসই বা অ্যাডাপ্টিভ প্রযুক্তি শিখতে পারে ভবিষ্যতের জন্য। সচিব বলেন, ধারণা করা হয়, মানব প্রজন্ম দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে। তাদের আরাম-আয়েশে বেঁচে থাকার জন্য প্রযুক্তি দরকার। এ ধরনের সংস্কার-সংরক্ষণ কাজের অভিজ্ঞতা থেকে অ্যাডাপ্টিভ পদ্ধতিতে পরিবেশসম্মত উপায়ে আরো উন্নত ধারণা বা প্রযুক্তি বেরিয়ে আসবে সে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রতন চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, লালবাগ দুর্গের হাম্মামখানাকে যথাসম্ভব আদিরূপে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। হাম্মামখানা ছাড়াও লালবাগ দুর্গের অন্যান্য স্থাপনাকেও পর্যায়ক্রমে সংস্কার-সংরক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।

 

সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ, প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন অংশীজন, জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরসহ অন্যান্য বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। প্রতিমন্ত্রী এর আগে লালবাগ দুর্গস্থ হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, বাংলাদেশ আয়োজিত US Ambassadors Fund for Cultural Preservation- Small Grants Competition (Fiscal Year 2020)-এ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত প্রস্তাবটি ছিল- "Restoring, Retrofitting and 3D Architectural Documentation of Historical Mughal Hammam of Lalbag Fort, Lalbag, Dhaka, Bangladesh."

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিকে সামনে রেখে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে লালবাগ দুর্গের হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণের এ পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত হেরিটেজ সেলের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। হেরিটেজ সেলের সদস্যবৃন্দ হলেন- ড. আমিরুজ্জামান, উপপরিচালক, খন্দকার মাহফুজ আলম, সহকারী স্থপতি এবং মোঃ খায়রুল বাসার স্বপন, ফিল্ড অফিসার।

 

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অর্থায়নে RRAD of Mughal Hammam Lalbag প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ

লালবাগ কেল্লা ১৬ শতকে নির্মিত একটি অসম্পূর্ণ দূর্গ। ১৬৭৮ সালে মোঘল সুবেদার মুহাম্মদ আযম শাহ এই দূর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। লালবাগ কেল্লায় একটি মসজিদ, পরিবিবির মাজার এবং হাম্মামখানা রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কতৃক ইতোপূর্বে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে ছাদ বাগান এবং পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থার প্রত্নসাক্ষ্য সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। ১৯৯৯ সালে লালবাগ কেল্লা বাংলাদেশের অনন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য সম্ভাব্য তালিকায় (টেনটেটিভ লিস্ট) অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। দোতলা বিশিষ্ট হাম্মামখানা ভবনটি মোঘল সুবেদারদের দরবার হল হিসেবে ব্যবহৃত হত।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো গবেষণা ও ডকুমেন্টশনের মাধ্যমে হাম্মাম ভবনের সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং ইতোপূর্বে সনাক্তকৃত ক্ষতি প্রশমনের নিমিত্ত জরুরি কিছু সংস্কার-সংরক্ষণ কাজ সম্পাদন। এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত উপাদানসমূহ নিম্নরূপঃ

  • হেরিটেজ ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট (Heritage Impact Assessment)
  • ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক ডকুমেন্টশন (3D Architectural Documentation)
  • হাম্মামখানা ভবনের সংস্কার-সংরক্ষণ
  • ভবনের বৈদ্যুতিক কাজ
  • হাম্মামের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন

প্রকল্পটির নির্ধারিত ছিল সময়সীমা অক্টোবর ২০২০ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২২। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজটি শুরু হতে দেরি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প সমাপ্ত হওয়া চ্যালেঞ্জ থাকায় আগামী মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত নির্ধারিত বাজেটের মধ্যেই সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে।

 

ইতোমধ্যে সম্পাদিত কার্যক্রমসমূহ

  • ২৪ মার্চ ২০২১ সালে লালবাগ কেল্লায় এই প্রকল্পের বাস্তব কাজ উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ, এমপি এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মাণ্যবর রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জনাব মো: বদরুল আরেফীন। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো: আতাউর রহমান, যুগ্মসচিব (মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব), সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রকল্পের বিশেষজ্ঞবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ।
  • প্রকল্পের কাজের জন্য ৩ জন বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞগণের মধ্যে রয়েছেন দেশীয় বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম. আহমেদ ও অধ্যাপক ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ ড. টি এম জে নিলান কোরে।
  • ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক ডকুমেন্টেশন (3D Architectural Documention) কাজের জন্য বিশেষায়িত ফার্ম হিসেবে গ্লোবাল সার্ভে কনসালট্যান্টসকে নিয়োজিত করা হয়। এ প্রকল্পটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের হেরিটেজ সেলের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
  • ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক ডকুমেন্টেশন (3D Architectural Documentation) সম্পাদিত হয়েছে।
  • STRUCTURAL ANALYSIS করা হয়েছে:
    • Load Bearing Wall's Capacity
    • Brick Compressive Strength
    • Floor Crack Vulnerability
    • Roof Water Penetration & Remediation
  • হেরিটেজ ইম্প্যাক্ট এসেসমেন্ট (Heritage Impact Assessment) করা হয়েছে।
  • খসড়া Conservation Plan প্রস্তুত করে সেমিনার অয়োজন করা হয়েছে।
  • Conservation Plan চুড়ান্ত করা হয়েছে।
  • Conservation Plan অনুযায়ী হাম্মামখানা ভবনের সংস্কার-সংরক্ষণের নিমিত্ত নিম্নোক্ত কাজগুলি করা হয়েছে:
  1. Deplaster up to springer level.
  2. Remove all elements of later addition (Side wall Screens, doors, niches, openings)
  3. Strengthening the brick masonry Including Retrofitting, 4) Removing mosaic around the walls
  4. Restore all original elements: Stair (Need finishing), Light well (Create mouldings), Openings (west and front wall), Parapets (west wall), Brick Frizzes, All Niches (interior and exterior), Lintel Arches (gr. Floor), Brackets (already started), Cornices (already started), Entrance Steps
  5. Inside Plaster/pointing upto spinger level
  6. Roof repairing
  7. Scrubbing the interior plaster/ornamentation
  8. Lime coating

   

চলমান কাজসমূহ:

  • ভবনের বৈদ্যুতিক কাজ
  • হাম্মামের পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন
  • Glass fittings এর মাধ্যমে দর্শকের জন্য আকর্ষনযোগ্যভাবে উপস্থাপনের কাজ
  • Outside Plaster (already started).